এলাচ (Cardamom), যা বাংলায় ‘এলাচি’নামেও পরিচিত। এলাচ একটি সুগন্ধিযুক্ত মসলা। একে “মসলার রানী” হিসেবেও আখ্যায়িত করা হয়। এটি কেবল খাবারের স্বাদ ও ঘ্রাণ বৃদ্ধির জন্যই ব্যবহৃত হয় না, এর ঔষধি গুণাবলীও উল্লেখযোগ্য। এলাচের বৈজ্ঞানিক নাম Elettaria cardamomum এবং এটি সাধারণত সবুজ এলাচ নামে পরিচিত। তবে, এলাচের মধ্যে কালো এলাচ বেশি কার্যকর। মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে এলাচের তুলনা নেই। এলাচের উপকারিতা অনেক এবং এটি আমাদের দৈনন্দিন জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
১) হজমশক্তি বৃদ্ধি করেঃ
এলাচ পাকস্থলীতে অ্যাসিড নিঃসরণের প্রক্রিয়াকে সহায়তা করে। এলাচ পেটের ফোলাভাব, অম্বল এবং গ্যাসের সমস্যা দূর করে। এলাচে থাকা ভোলাটাইল অয়েলগুলি হজমশক্তি এবং অন্ত্রের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে।
২) মুখের দুর্গন্ধ দূর করেঃ
এলাচে প্রাকৃতিক ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধী উপাদান থাকে। এলাচ চিবালে মুখের দুর্গন্ধ দূর হয় এবং মুখ সতেজ থাকে। এলাচ মাড়ির স্বাস্থ্য রক্ষা করতে এবং দাঁতের ব্যথা কমাতে ভুমিকা পালন করে।
৩) শ্বাসকষ্ট এবং সর্দি-কাশি দূর করেঃ
এলাচ শ্বাসকষ্ট, কাশি এবং সর্দি প্রতিরোধ করে। এটি শ্বাসনালীর প্রদাহ কমাতে এবং শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা নিরাময়ে ভুমিকা রাখে।
৪) রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করেঃ
গবেষণায় দেখা গেছে এলাচে উপস্থিত পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম রক্তের চাপ স্বাভাবিক রাখতে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে।
৫) মানসিক চাপ কমায়ঃ
এলাচ মানসিক চাপ কমাতে এবং মনকে সতেজ রাখতে সাহায্য করে। এলাচের অপরিহার্য তেলগুলি স্নায়ুকে উদ্দীপিত করে। তাই এটি অ্যারোমাথেরাপিতেও ব্যবহৃত হয়।
৬) রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করেঃ
এলাচে প্রচুর পরিমানে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা শরীরের ক্ষতিকর ফ্রি র্যাডিক্যালের বিরুদ্ধে কাজ করে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বার্ধক্য প্রতিরোধ করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
৭) ব্যথা কমায়ঃ
এলাচের অ্যান্টিইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য শরীরের যেকোনো ধরনের প্রদাহ কমাতে ভুমিকা রাখে। আর্থ্রাইটিস, মাংসপেশির ব্যথা এবং অন্যান্য প্রদাহজনিত সমস্যার জন্য এলাচ কার্যকর।
৮) কিডনি সুস্থ রাখেঃ
এলাচ কিডনির কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং মূত্রনালীর সংক্রমণ প্রতিরোধ করে। এলাচ কিডনির জন্য একটি প্রাকৃতিক টনিক হিসেবে কাজ করে।
৯) ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করেঃ
এলাচের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টিসেপটিক গুণাবলী ত্বকের যত্নে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে। ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে এবং ত্বককে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
১০) চুল পড়া প্রতিরোধ করেঃ
এলাচ চুলের গোড়া মজবুত করতে এবং চুল পড়া প্রতিরোধে ভুমিকা রাখে। এলাচের তেল চুলের শুষ্কতা দূর করে এবং চুলের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে।